প্রভিডেন্ট ফান্ডের হুকুম

By | April 22, 2021

প্রশ্ন:

প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা টাকার যাকাত দিতে হবে কি? ও জমার অতিরিক্ত কি সুদ ?

মাহফুজ রিফাত

উত্তর: وبالله سبحانه التوفيق

সরকারের জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ডে (জিপিএফ) বা সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিলে রাখা টাকায় সুদ মেলে ১৩.৫ শতাংশ। এই উচ্চ সুদের কারণে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেদের মূল বেতনের পুরোটাই জমাতেন প্রভিডেন্ট ফান্ডে। ১৯৭৯ সাল থেকে চলে আসা এমন সঞ্চয়ে এবার রাশ টানল সরকার। এখন থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা তাঁদের মূল বেতনের ২৫ শতাংশের বেশি প্রভিডেন্ট ফান্ডে রাখতে পারবেন না। প্রভিডেন্ট ফান্ডে রাখার সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে মূল বেতনের ৫ শতাংশ আর সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান স্বাক্ষরিত সাম্প্রতিক এক গেজেটে ‘জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড রুলস, ১৯৭৯’-এর ৯(১)(বি) সংশোধিত ধারায় এই সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরিজীবী তাঁর মূল বেতনের সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা রাখতে পারবেন।

প্রভিডেন্ট ফান্ড দু ভাবে পরিচালিত হয়;

১. সরাসরি সরকার পরিচালিত; তথা সরকার কর্তন করত: তার স্যালারি একাউন্টে বেতন প্রদান করে। চাই কর্তন আবশ্যিক হোক বা ঐচ্ছিক।

ফলে উক্ত কর্তনকৃত পরিমাণ টাকা মালিকানাভূক্ত হয় না। তাই এই সরকার পরিচালিত প্রভিডেন্ট ফান্ডের যাকাত নাই। ‏এ সূরতে হাতে আসার পর বছর ঘূর্ণায়ন হলে তখন যাকাত দিবে। আর যদি পূর্বেই সাহেবে নেসাব থাকে তাহলে ঐ নেসাবের সাথে সংযোজিত করে পুরাটার যাকাত দিবে।

আর বেতন পূর্ব কর্তনের অতিরিক্ত প্রদেয় পরিমাণ সুদ নয়।

(তবে যদি নিশ্চিত জানতে পারে যে ঐ অতিরিক্ত অংশ হারাম উৎস থেকে দেওয়া হয়েছে তাহলে তা গ্রহণ করলে সাদাকা বা কল্যাণ খাতে ব্যয় করবে)

আর ঐচ্ছিক কর্তনকৃত পরিমাণের অতিরিক্ত হালাল উৎস থেকে প্রদত্ত হলেও তা ব্যবহার না করে সাদাকা বা কল্যাণ খাতে ব্যয় করা উচিত।

২. চাকুরি প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা দায়িত্বশীল পরিচালিত; তথা সরকার ফুল বেতন প্রদান করে কিন্তু প্রতিষ্ঠান প্রধান বা দায়িত্বশীল কর্তন করত ফান্ড পরিচালনা করে। চাই কর্তন আবশ্যিক হোক বা ঐচ্ছিক হোক।

ফলে তা প্রধান বা দায়িত্বশীলের কবয বা হস্তগত হওয়ায় কর্মকর্তা/কর্মচারির কবয বা হস্তগত হয়, যা তার মালিকানাভূক্ত হয়, তাইএই ধরণের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা টাকার যাকাত দিতে হবে। এ সূরতে টাকা হাতে আসার আগে বা পরেও দিতে পারবে।

এ ধরণের প্রভিডেন্ট ফান্ডের প্রদেয় অতিরিক্ত সাধারণত হারাম উৎস থেকেই দেওয়া হয় তাই তা গ্রহণ করলে সাদাকা করবে বা কল্যাণ খাতে ব্যয় করবে।

তবে যদি হালাল উৎস ও শরীয়াহ সম্মত উপায়ে প্রদত্ত হয় তাহলে ব্যবহার জায়িয হবে। والله تعالى اعلم

أما الکلام في دین العباد فنقول: إنما یمنع وجوب الزکاة ؛ لأن ملک المدیون في القدر المشغول بالدین ناقص، ألا تری أنہ یستحق أخذہ من غیر قضاء ولا رضاء کأنہ في یدہ غصب أو ودیعة، ولھذا حلت لہ الصدقة ولا یجب علیہ الحج، والملک الناقص لا یصح سببا لوجوب الزکاة (الفتاوی التاتار خانیة، کتاب الزکاة، الفصل العاشر في بیان ما یمنع وجوب الزکاة، ۳: ۲۳۱، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔

والباحث في کتب الفقہ یجد أن أسباب وجوب الدین عدیدة متنوعة، غیر أنہ یمکن حصرھا في تسعة أسباب؛ أحدھا الالتزام بالمال سواء أکان في عقد یتم بین طرفین کالبیع والسلم والقرض والإجارة والزواج والطلاق بالمال والحوالة والکفالة بالمال والاستصناع ونحوھا الخ علی أن جمیع الدیون التي تثبت في عقود المعاوضات المالیة لا تستقر في الذمة بعد لزومھا إلا بقبض البدل المقابل لھا الخ (الموسوعة الفقہیة، ۲۱: ۱۱۰، ط: الکویت)۔

قال القاضي جلال الدین البلقیني: وجمیع الدیون التي في الذمة بعد لزومھا وقبض المقابل لھا مستقرة إلا دینا واحداً ھو دین السلم؛ فإنہ وإن کان لازماً فھو غیر مستقر، وإنما کان غیر مستقر؛ لأنہ بصدد أن یطرأ انقطاع المسلم فیہ فینفسخ العقد، فمعنی الاستقرار في الدیون اللازمة من الجانبین الأمن من فسخ العقد بسبب تعذر حصول الدین المذکور لعدم وجود جنسہ وامتناع الاعتیاض عنہ، وذلک مخصوص بدین السلم دون بقیة الدیون، وأما دین الثمن بعد قبض المبیع فإنہ أمن فیہ الفسخ المذکور وإن تعذر حصولہ بانقطاع جنسہ جاز الاعتیاض عنہ وکذا الفسخ بسبب رد بعیب أو إقالة أو تحالف اھ (الأشباہ والنظائر للسیوطي، الکتاب الرابع في أحکام یکثر دورھا ویقبح بالفقیہ جھلھا، القول في الملک، المسألة الخامسة في الاستقرار، ص: ۳۲۶، ط: دار الکتب العلمیة، بیروت)۔

وتستقر الأجرة في الإجارة بالاستیفاء وبقبض العین المستأجرة وإمساکھا حتی مضت مدة الإجارة الخ (المصدر السابق، ص: ۳۲۵)۔

وأما کون الاستقرار شرط وجوب الزکاة فلقولھم في الأجرة: لا یلزمہ أن یخرج إلا زکاة ما استقر (المصدر السابق، القول في الدین، الحکم الخامس، ص: ۳۳۲)۔

واعلم أن الأجر لا یلزم بالعقد فلا یجب تسلیمہ بہ؛ بل بتعجیلہ أو شرطہ في الإجارة المنجزة … أو الاستیفاء للمنفعة أو تمکنہ منہ الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الإجارة، ۹: ۱۳، ۱۴، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔

قولہ: ”لا یلزم بہ بالعقد“: أي: لا یملک بہ کما عبر في الکنز؛ لأن العقد وقع علی المنفعة، وھي تحدث شیئاً فشیئاً، وشأن البدل أن یکون مقابلاً للمبدل، وحیث لا یمکن استیفاوٴھا حالاً لا یلزم بدلھا حالاً إلا إذا شرطہ الخ (رد المحتار)۔

ویسلم الثمن أولاً في بیع سلعة بدنانیر ودراھم إن أحضر البائع السلعة (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب البیوع، قبیل باب خیار الشرط، ۷: ۹۳)۔

-মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদীস ২৭৯; আহকামুল কুরআন জাসসাস ১/৪৬৭; ইমদাদুল আহকাম ১/৪৭৯

উত্তর প্রদান

মুফতী মাসূম বিল্লাহ

সিনিয়র মুহাদ্দিছ ও মুফতী,

জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম ঢাকা (মসজিদুল অকবার কমপ্লেক্স) মিরপুর-১, ঢাকা।

ও উস্তাযুল ফিকহ ওয়াল ইফতা,

মারকাযুল বুহূস আল-ইসলামিয়া ঢাকা।

খতীব,

আল মদীনা মসজিদ, ইস্টার্ন হাউজিং, রূপনগর, মিরপুর, ঢাকা।

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *