শবে মিরাজে নামায-রোযা আছে কি?

By | February 26, 2022

وبالله سبحانه التوفيق

#শবে_মিরাজ উদযাপন বা বিশেষ গুরুত্ব প্রদান কিংবা কোন আমল করার দলীল-প্রমাণ নেই।

কেননা

শবে মিরাজ যদি শবে বরাত বা শবে কদরের মত ফযীলতপূর্ণ কোন ইবাদতের রাত হত তাহলে তার দিন তারিখ সংরক্ষিত থাকতো।

রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ ব্যাপারে হাদীস বর্ণিত হতো।

সাহাবায়ে কেরাম রা. এর কোন না কোন আমল পাওয়া যেতো।

অথচ এ বিষয়ে কুরআন হাদীসে কোন আমলের কথা বর্ণিত নেই।

সাহাবা-তাবেঈন থেকেও মেরাজ উপলক্ষে কোনো কিছু পালন বা আমল করার কোন দলীল পাওয়া যায় না। এতে করণীয় কিছু থাকলে অবশ্যই তাঁরা করতেন।

প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. (মৃত্যু ৮৫২ হি.) ‘তাবয়ীনুল আজব’ রিসালায় লিখেন,

لم يرد في فضل شهر رجب، ولا في صيامه، ولا في صيام شيء منه معين، ولا في قيام ليلة مخصوصة فيه حديث صحيح يصلح للحجة.

‘রজব মাসের ফযীলত ও রোযা অথবা এ মাসের সুনির্দিষ্ট কোনো তারিখে রোযা কিংবা বিশেষ কোনো রাত্রি উদযাপন সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোন হাদীস বর্ণিত হয় নি।’ (তাবয়ীনুল আজব বিমা ওরাদা ফী ফাযলি রজব, পৃ. ১১)

ইবনে রজব হাম্বলী রাহ. বলেন,

সালাতুর রাগায়েব ও এর ফযীলত সম্পর্কিত হাদীস মিথ্যা ও জাল। অধিকাংশ ওলামার নিকট এ নামায বিদআত। যেমন আবু ইসমাইল আনসারী, আবু বকর সামআনী, আবুল ফযল ইবনে নাসির ও ইবনুল জাওযী রাহ. সহ অন্যরা এমনই মত ব্যক্ত করেছেন। আর এ নামাযের আবিস্কার যেহেতু চারশ হিজরীর পরে হয়েছে, তাই পূর্ববর্তীগণ থেকে এ সম্পর্কে কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না। (লাতায়িফুল মাআরিফ পৃ. ২২৮)

প্রখ্যাত ফকীহ ইবনে আবেদীন শামী রাহ. (মৃ. ১২৫২ হি.) বলেন, এ বিষয়ে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে সবই জাল ও বানোয়াট। (ফাতাওয়া শামী, ২/৪৭০)

‘তাম্বীহুল গাফিলীন’ পৃ. ৪৯৬ গ্রন্থে রয়েছে,

وهي بدعة ، الحديث الوارد فيها موضوع باتفاق المحدثين.

উক্ত নামায বিদআত এবং এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদীস মুহাদ্দিসীনদের সর্বসম্মতিক্রমে জাল।

এভাবে শবে এস্তেফতাহ নামে ১৪ই রজব দিবাগত রাতে চার রাকাআত নামায বিশেষ নিয়মে পড়ার যে বর্ণনা রয়েছে, তাও বানোয়াট। ইবনে রজব রাহ. বলেন, রজবের বিশেষ পদ্ধতির নামাযের কোন বর্ণনাই প্রমাণিত নয়। (লাতায়িফ, পৃ. ২২৮)

ইমাম ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন :

هَذَا إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ الْإِسْرَاءِ تُعْرَفُ عَيْنُهَا، فَكَيْفَ وَلَمْ يَقُمْ دَلِيلٌ مَعْلُومٌ لَا عَلَى شَهْرِهَا وَلَا عَلَى عَشْرِهَا وَلَا عَلَى عَيْنِهَا، بَلِ النُّقُولُ فِي ذَلِكَ مُنْقَطِعَةٌ مُخْتَلِفَةٌ لَيْسَ فِيهَا مَا يُقْطَعُ بِهِ،

‘এটা তখনই ঠিক হতো, যখন মিরাজের রাত নির্দিষ্টভাবে জানা থাকত। অথচ এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত কোনো প্রমাণ নেই, না এর মাসের ব্যাপারে, না এর দশকের ব্যাপারে আর না নির্দিষ্ট কোনো দিনের ব্যাপারে; বরং এ ব্যাপারে সকল বর্ণনাই সূত্রবিচ্ছিন্ন ও মতানৈক্যপূর্ণ, যার কোনোটিই সুনিশ্চিত নয়।’ (জাদুল মাআদ : ১/৫৮, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত)

ইমাম ইবনু তাইমিয়া রহ. বলেন :

وَلَا شُرِعَ لِلْمُسْلِمِينَ تَخْصِيصُ اللَّيْلَةِ الَّتِي يُظَنُّ أَنَّهَا لَيْلَةُ الْإِسْرَاءِ بِقِيَامٍ وَلَا غَيْرِهِ.

‘অনুরূপ মুসলমানদের জন্য নির্দিষ্টভাবে কোনো রাতকে শবে মিরাজ মনে করা এবং তাতে নামাজ ও অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগি করাও শরিয়া-অনুমোদিত নয়।’ (জাদুল মাআদ : ১/৫৮, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসাল, বৈরুতি)

হাফিজ ইবনু কাইয়িম আল-জাওজিয়া রহ. বলেন :

وَكُلُّ حَدِيثٍ فِي ذِكْرِ صَوْمِ رَجَبٍ وَصَلاةِ بَعْضِ اللَّيَالِي فِيهِ فَهُوَ كَذِبٌ مُفْتَرًى كَحَدِيثِ مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ أَوَّلَ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ عِشْرِينَ رَكْعَةً جَازَ عَلَى الصِّرَاطِ بِلا حِسَابٍ وَكُلُّ حَدِيثٍ فِي ذِكْرِ صَوْمِ رَجَبٍ وَصَلاةِ بَعْضِ اللَّيَالِي فِيهِ فَهُوَ كَذِبٌ مُفْتَرًى كَحَدِيثِ “مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ أَوَّلَ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ عِشْرِينَ رَكْعَةً جَازَ عَلَى الصِّرَاطِ بِلا حِسَابٍ.

‘রজব মাসের রোজা ও এতে কিছু রাতের নামাজের ব্যাপারে বর্ণিত প্রতিটি হাদিসই মিথ্যা ও জাল। যেমন একটি হাদিস হলো, “যে ব্যক্তি রজবের প্রথম তারিখ রাতে বিশ রাকআত নামাজ পড়বে, সে বিনা হিসাবে পুলসিরাত পার হয়ে যাবে।”’ (আল-মানারুল মুনিফ : পৃ. নং ৯৬, প্রকাশনী : মাকতাবাতুল মাতবুআতির ইসলামিয়্যা, হালব)

শায়খ আবু উমামা ইবনে নাক্কাশ রাহ. (মৃ. ৭৬৩ হি.) বলেন,

وأما ليلة الإسراء فلم يأت فى أرجحية العمل فيها حديث صحيح ولا ضعيف. ولذلك لم يعينها النبى صلى الله عليه وسلم لأصحابه، ولا عينها أحد من الصحابة بإسناد صحيح، ولا صح إلى الآن ولا إلى أن تقوم الساعة فيها شىء، ومن قال فيها شيئا فإنما قاله من كيسه لمرجح ظهر له استأنس به، ولهذا تصادمت الأقوال فيها وتباينت، ولم يثبت الأمر فيها على شىء، ولو تعلق بها نفع للأمة – ولو بذرة – لبينه لهم نبيهم صلى الله عليه وسلم.

শবে মেরাজের আমল উত্তম হওয়া সম্পর্কে কোন সহীহ বা দুর্বল হাদীসও বর্ণিত হয়নি। এ কারণেই রাসূল সাহাবায়ে কেরামকে উক্ত রাত নির্ধারিত করে দেননি এবং কোন সাহাবীও তা নির্দিষ্ট করেন নি। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে বিশুদ্ধ সূত্রে কিছুই বর্ণিত হয় নি এবং কেয়ামত পর্যন্তও হবে না।

আর যে এ সম্পর্কে কিছু বলেছে, সে নিজ থেকেই বলেছে, যা তার কাছে প্রাধান্য পেয়েছে। এ কারণেই এত মতভেদ হয়েছে, যার কোন সুরাহা নেই। অতঃপর বলেন, শবে মেরাজে যদি উম্মতের জন্য সমান্যও করণীয় থাকত, অবশ্যই রাসূল তা সাহাবায়ে কেরামকে বলতেন।’ (আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ, কাসতাল্লানী, ৩/১৪)

ইমাম তকীউদ্দীন সুবকী রাহ. (মৃ. ৭৫৬ হি.) বলেছেন, ২৭ই রজব মেরাজ উপলক্ষে অনুষ্ঠান করা বিদআত। (আস-সায়ফুল মাসলূল পৃ. ৪৯২)

মুহাদ্দিস আজলূনী রাহ. (মৃ. ১১৬২ হি.) লিখেন,

وكذا صلاة عاشوراء وصلاة الرغائب موضوع بالاتفاق، وكذا صلاة ليالي رجب وليلة السابع والعشرين من رجب.

আশুরার নামায, সালাতুর রাগায়িব ও রজবের রাতসমূহে এবং রজবের ২৭ তারিখের রাতের নামায সংক্রান্ত বর্ণনাগুলো সর্বসম্মতিক্রমে জাল ও বানোয়াট। (কাশফুল খাফা ২/৪১০)

শাইখ সাইয়িদ সাবিক রহ. বলেন :

وصيام رجب، ليس له فضل زائد على غيره من الشهور، إلا أنه من الاشهر الحرم. ولم يرد في السنة الصحيحة: أن للصيام فيه فضيلة بخصوصه، وأن ما جاء في ذلك مما لا ينتهض للاحتجاج به.

‘আর অন্যান্য মাসের রোজার তুলনায় রজবের রোজার অতিরিক্ত কোনো মর্যাদা নেই, তবে এতটুকু যে, রজব হলো হারাম বা মর্যাদাপূর্ণ মাসসমূহের একটি। বিশুদ্ধ হাদিসে এমনটা পাওয়া যায় না যে, রজব মাসে রোজার বিশেষ কোনো মর্যাদা আছে। এ ব্যাপারে যেসব বর্ণনা এসেছে, তার কোনোটিই দলিলের উপযোগী নয়।’ (ফিকহুস সুন্নাহ : ১/৪৫৩, প্রকাশনী : দারুল কিতাবিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)

শাইখ ইবনু উসাইমিন রহ. বলেন :

ثم ابتدع الناس في هذه الليلة بدعاً لم تكن معروفة عند السلف، فصاروا يقيمون ليلة السابع والعشرين من رجب احتفالاً بهذه المناسبة، ولكن لم يصح أنها- أعني: ليلة الإسراء والمعراج- كانت في رجب، ولا أنها في ليلة سبع وعشرين منه، فهذه البدعة صارت خطأً على خطأ: خطأً من الناحية التاريخية؛ لأنها لم تصح أنها في سبع وعشرين من رجب، وخطأ من الناحية الدينية؛ لأنها بدعة، فإن الرسول صلى الله عليه وعلى آله وسلم لم يحتفل بها، ولا الخلفاء الراشدون، ولا الصحابة، ولا أئمة المسلمين من بعدهم.

‘অতঃপর লোকেরা এ রাতে অনেক বিদআত আবিষ্কার করেছে, যা সালাফে সালিহিনের সময় প্রচলিত ছিল না। তারা এ উপলক্ষে রজবের সাতাশ তারিখে শবে মিরাজ উদযাপন করে। অথচ মিরাজ যে রজব মাসে হয়েছে এবং এটা যে রজবের সাতাশ তারিখে; এর কোনোটিই প্রমাণিত নয়। অতএব, এ বিদআত ভুলের ওপর ভুল বলে গণ্য হয়েছে। এক তো ঐতিহাসিক ভুল; কেননা রজবের সাতাশ তারিখে শবে মিরাজ হওয়া প্রমাণিত নয়। আর দ্বিতীয়টি হলো দ্বীনি ভুল; কেননা এটা বিদআত বা নবআবিষ্কৃত। যেহেতু রাসুলুল্লাহ সা., খুলাফায়ে রাশিদিন, সাহাবায়ে কিরাম ও তাঁদের পরবর্তী ইমামগণের কেউই শবে মিরাজ উদযাপন করেননি।’ (ফাতাওয়া নুর আলাদ দারব : ৪/২)

সুতরাং নির্ভরযোগ্য হাদীসে রজব মাস অথবা এর কোনো দিন বা রাতের কোনো ফযীলত নেই। কাজেই ‘বার মাসের ফযীলত’ বা এ জাতীয় বই-পুস্তকে এ মাস সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা সঠিক নয়।

• আমাদের অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে,

শবে বরাত ও শবে ক্বদর যেমন প্রতি বছর আসে, তেমনি শবে মিরাজও প্রতি বছর আসে৷

বস্তুত এ ধারণা সঠিক নয়!

এভাবে মেরাজ উপলক্ষে —

এ রাতে নির্দিষ্ট ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল হওয়া, দিনে রোযা রাখা,

সরকারীভাবে শবে মি‘রাজ পালনের উদ্যোগ নেওয়া,

এই রাত্রকে উদ্দেশ্য করে মসজিদে ভীড় জমানো,

মসজিদে আলোকসজ্জা করা,

রাত্র জাগরণ করা,

বাড়ী বাড়ী মীলাদ পড়া,

প্রচার মাধ্যমে এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা,

পত্রপত্রিকায় বিশেষ নিবন্ধন প্রকাশ করা,

শবে মি‘রাজ উপলক্ষে হালুয়া রুটির আয়োজন করা ।

বিশেষত-

মসজিদে সমবেত হওয়া,

অধিক বাতি জালানো,

খাবারের আয়োজন করা,

‘মেরাজের নামায’ হিসেবে নামায পড়া

ও পরের দিন রোযা রাখা-

ইত্যাদি কোনটাই সহীহ নয়।

এ সবই শরীয়ত বহির্ভূত ও বিদআতের অন্তর্ভূক্ত।

আর বিদআতের ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে।

যেমন

সহিহ বুখারির বর্ণনায় এসেছে :

حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ القَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ، فَهُوَ رَدٌّ.

‘আয়িশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু আবিষ্কার করল, যা দ্বীনের অংশ নয় তাহলে তা প্রত্যাখ্যাত।’ (সহিহুল বুখারি : ৩/১৮৪, হা. নং ২৬৯৭)

সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে :

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا خَطَبَ احْمَرَّتْ عَيْنَاهُ، وَعَلَا صَوْتُهُ، وَاشْتَدَّ غَضَبُهُ، حَتَّى كَأَنَّهُ مُنْذِرُ جَيْشٍ… وَيَقُولُ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ خَيْرَ الْحَدِيثِ كِتَابُ اللهِ، وَخَيْرُ الْهُدَى هُدَى مُحَمَّدٍ، وَشَرُّ الْأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا، وَكُلُّ بِدْعَةٍ ضَلَالَة.

‘জাবির বিন আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. যখন খুতবা (ভাষণ) দিতেন তখন তাঁর চক্ষুদ্বয় রক্তিম বর্ণ ধারণ করত, কণ্ঠস্বর জোরালো হতো, তাঁর রাগ বেড়ে যেত; এমনকি মনে হতো, তিনি যেন শত্রুবাহিনী সম্পর্কে সতর্ক করছেন …এবং বলতেন, সর্বনিকৃষ্ট কর্ম হলো বিদআত বা দ্বীনের নামে নবআবিস্কৃত কাজ। আর প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহি।’ (সহিহু মুসলিম : ২/৫৯২, হা. নং ৮৬৭)

অতএব ,

বৎসরের অন্যান্য দিনের মত স্বাভাবিক ইবাদত বন্দেগী করাই আমাদের এ দিনের কর্তব্য।

আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে বিদআত থেকে বেঁচে থেকে সুন্নাহসম্মত আমল করার তাওফিক দান করুন।

মুফতী মাসুম বিল্লাহ।

Facebook Comments Box