প্রশ্ন:
হুজুর! আরাফার রোযা নিয়া অনেকে বাড়াবাড়ি করছে। আপনার একটা মূল্যবান পোষ্ট কামনা করছি, যাতে শিয়ার করতে পারি। জাতি উপকৃত হবে।
ইকরামুজ্জামান।
উত্তর: وبالله سبحانه التوفيق
আগে একটা বিষয় খোলাসা করি, পরে বাকি বিষয় আসছে… ইনশাআল্লহ!
হাদীছের মূলপাঠে শব্দ “يوم عرفة” “ইয়াওমি আরাফাহ”!
এখানে দুটি শব্দ :
যথা;১. ইয়াওম يوم ২. আরাফাহ عرفة
যদি হাদীছের মূলপাঠের শব্দ দেখি, প্রাসঙ্গিক বিষয়/ব্যাখ্যা না দেখি, তাহলে দেখুন;
ইয়াওমি আরাফাহ তথা আরাফাহ দিবস;
বলাবাহুল্য, ইয়াওম বা দিবস শরীয়াতে বিশেষত সিয়াম/রোযার ক্ষেত্রে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ধর্তব্য, সিয়াম/রোযা পালনকারীর স্থান হিসেবে, যাতে কারো দ্বিমত নাই!তাহলে ইয়াওমি আরাফাহ বা আরাফাহ দিবসে সিয়াম/রোযা শুরু হবে সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সিয়াম/রোযা পালনকারীর নিজ স্থান হিসেবে!
এখন বলুন!আমরা বাংলাদেশে সিয়াম/রোযা করবো বাংলাদেশের সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নাকি সৌদির হিসেবে?
উত্তরে সবাই বলবেন, বাংলাদেশ হিসেবে।
এবার বলুন! যদি বাংলাদেশের হিসেবে হয় তাহলে বাংলাদেশের সুবহে সাদিক সৌদির সুবহে সাদিক হতে ৩ ঘন্টা আগেই হয়। তাহলে বাংলাদেশের সিয়াম/রোযা সৌদির আরাফাহ দিবসের ৩ ঘন্ট আগে শুরু হবে,তদ্রুপ ৩ ঘন্টা আগে শেষ হবে!
এবার বলুন! আরাফাহ দিবসের সাথে কি মিল/সমন্জস্য হল?আর যেখানে সৌদির দিবসের সময় রাত তারা কি রাতে রোযা রাখবে?
উত্তরে অবশ্যই বলবেন: মিল/সমন্জস্য নাই, আর রাতেও নয়!
অতএব, হাদীছের মূলপাঠ ইয়াওমি আরাফাহ বা আরাফাহ দিবস ঠিক রাখতে হলে ৯ যিলহজ্জই উদ্দেশ্য হবে!
তদ্রুপ;অপর হাদীছে তাকবীরে তাশরীকও ইয়াওমি আরাফাহ হতে শুরু করতে বলা হয়েছে, এবং ৫ দিনের কথা বলা হয়েছে;
এখন দেখুন!সৌদির আরাফাহ দিবস ধরলে বাংলাদেশের ফজরে তাকবীরে তাশরীক পড়া যাবে না! অথচ সবাই বলবে বাংলাদেশের ফজর হতেই পড়তে হবে!
দ্বিতীয়ত: সৌদির হিসাব মতে শুরু করলে বাংলাদেশে ৬দিন হবে!আরেকটি কথা!আরাফাহ দিবস পরবর্তী দিবস ইয়াওমুন নাহর বা কুরবানী দিবস বা ঈদের দিন
এখন বলুন!আরাফাহ ও ঈদের দিনের মাঝে কি কোন দিন আছে?
উত্তরে অবশ্যই বলবেন, নাই। এটা সর্বজন স্বীকৃত বিষয়!
অতএব,আরাফাহ দিবস তথা ৯ই যিলহজ্ব প্রত্যেক দেশ অনুপাতে হবে।
এ দিনে বিশেষ দুটি আমলের ব্যপারে হাদিসে এসেছে :
১. সিয়াম/রোযা রাখা
২. ফজর থেকে প্রতি নামাযের পর তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা।
দুটি আমলের ব্যপারে হাদিসে يوم عرفة শব্দই ব্যবহৃত হয়েছে।
সুতরাং সিয়াম/রোযা ও তাকবীরে তাশরিক যার যার দেশ অনুপাতে ৯ই যিলহজ্জই শুরু করবো, সেদিনই আরাফার দিন।
• পরবর্তী ব্যাখ্যাকারগণ জিলহজ্বের নবম দিন তথা ৯ তারিখকেই ইয়াওমে আরাফা বলেছেন।
ইমাম নওয়াবী (৬৭৬ হি.) রহ. তাঁর মুসলিম শরীফের বিখ্যাত শরাহ আল মিনহাজে জিলহজের নয় দিনের রোজা সম্পর্কে বলেন—
هي مستحبة استحبابا شديدا، لا سيما التاسع منها وهو يوم عرفة. (شرح رقم الحديث: 1171—جزء 7 صفحة 71 الشاملة)
এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব। বিশেষকরে নবম দিন। যা ইয়াওমে আরাফা।
ইমাম নওয়াবীর মতটি;আল্লামা আজীমাবাদী (১৩২৯ হি.) তাঁর “আউনুল মা’বুদে”, আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী (১৩৫৩ হি.) তাঁর “তুহফাতুল আহওয়াজিতে” উল্লেখ করেছেন।
মিশকাতের শরাহ মিরআতুল মাফাতিহেও ৯ তারিখকে ইয়াওমে আরাফা বলা হয়েছে।———
عن أبى قتادة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وآله وسلم قال: «صيام يوم عرفة أحتسب على الله أن يكفر السنة التى قبله والسنة التى بعده»- رواه مسلم رواه النسائي عن بعض أزواج النبي صلى الله عليه وسلم: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصوم تسعا من ذي الحجة ويوم عاشوراء وثلاثة أيام من كل شهر أول اثنين من الشهر وخميسين، وصححه الألباني
عن عُمرَ بنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عنه: (أنَّه كان يُكبِّر دُبرَ صلاةِ الغداةِ من يومِ عَرفةَ إلى صلاةِ العصرِ مِن آخِرِ أيَّامِ التَّشريقِ) - رواه ابن المنذر في ((الأوسط)) (2200)، والبيهقي (3/314) (6496)
.عن عليٍّ رَضِيَ اللهُ عنه: (أنَّه كان يُكبِّرُ من صلاةِ الفجرِ يومَ عَرفةَ، إلى صَلاةِ العَصرِ مِن آخِرِ أيَّامِ التَّشريقِ) -رواه ابن أبي شيبة في ((المصنف)) (2/165). صحَّحه الألباني في ((إرواء الغليل)) (3/125).
উত্তর প্রদান :
মুফতী মাসুম বিল্লাহ ।
সিনিয়র মুহাদ্দিস ও মুফতি -জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম,ঢাকা।
খতিব-আল মদিনা জামে মসজিদ, ইস্টার্ন হাউজিং, মিরপুর, ঢাকা।
Sharia Specialist, Islamic Economist, Banking & Finance Expert.
Khatib & Mufassir at Al Madina Jame Masjid at Eastern Housing, Pallabi Phase-2, Mirpur 11 ½.
Senior Muhaddis & Mufti at Jamia Islamia Darul Uloom Dhaka,Masjidul Akbar Complex, Mirpur-1,Dhaka-1216
Ustazul fiqh & Ifta at مركز البحوث الاسلامية داكا. Markajul Buhus Al Islamia Dhaka