কবরে মাটি দেয়ার দোয়া পড়া কি বৈধ ও প্রমাণিত?

By | August 17, 2021

প্রশ্ন:

কবর দেওয়ার সময় আমরা যে কোরআনের আয়াত পড়ি যেমন:মিনহা খালাকনাকুম …………..।এই আয়াত পড়া কতটুকু সুন্নাহ ও শরীয়ত সম্মত বা জায়েজ???

উত্তর: وبالله سبحانه التوفيق

মাইয়্যেতের দাফনের কাজে উপস্থিত ব্যক্তিদের জন্য মুস্তাহার বা করণীয় এই যে,

প্রত্যেকে দু’হাত দিয়ে কিছু মাটি মাইয়্যেতের মাথার দিক দিয়ে কবরে তিনবার ফেলবে এবং প্রথমবার منها خلقناكم দ্বিতীয়বার وفيها نعيدكم ও তৃতীয়বার ومنها نخرجكم تارة اخرى পড়বে।

এ আমলের ভিত্তি রয়েছে।

আমলটি সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত।

রাসিলুল্লাহ সা. এর মেয়ে উম্মে কুলসুম রাঃ কে কবরে রাখার সময় এ দুআ পড়েছেন।

হাদীসে এসেছে…

لما وُضِعتْ أمُّ كلثومٍ ابنة رسولِ اللهِ صلَّى الله عليه وسلَّمَ في القبرِ، قال الرسول اللهِ صلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ: منها خلقناكم وفيها نعيدكم ومنها نخرجكم تارة أخرى قال: ثُمَّ لا أدري أقال: بسمِ اللهِ وفي سبيلِ اللهِ وعلى ملةِرسولِ اللهِ، أم لا، فلمَّا بنى عليها لحْدَها طفِقَ يطرحُ إليهم الجَبوبَ، ويقولُ: سدُّوا خلالَ اللَّبِنِ، ثُمَّ قال: أما إنَّ هذا ليس بشيءٍ ولكنَّه يطيبُ بنفسِ الحيِّ

الضياء المقدسي (٦٤٣ هـ)، السنن والأحكام ٣/١٧٦ • [ فيه ] عبيد الله بن زحر ، عن علي بن يزيد عن القاسم ، وثلاثتهم متكلم فيه • أخرجه أحمد (٢٢١٨٧)، والحاكم (٣٤٣٣)، والبيهقي (٦٩٧٣)

البيهقي (٤٥٨ هـ)، السنن الكبرى للبيهقي ٣/٤٠٩ • إسناده ضعيف • أخرجه أحمد (٢٢١٨٧)، والحاكم (٣٤٣٣)، والبيهقي (٦٩٧٣)

হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূল সাঃ এর মেয়ে উম্মে কুলসুম রাঃ কে কবরে রাখা হয়, তখন রাসূল সাঃ পড়েন “মিনহা খালকনাকুম ওয়াফীহা নুয়ীদুকুম ওয়ামিনহা নুখরিজুকুম তারাতান উখরা।

মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২১৮৭।

মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-৩৪৩৩।

সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৬৭২৬।

খুলাসাতুল আহকাম, হাদীস নং-৩৬৫১।

জামেউল মাসানীদ ওয়াস সুনান, হাদীস নং-১১০২৪।

মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৪২৩৯।

কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৮৮১।

আলমুসনাদুল জামে, হাদীস নং-৫২৫৩।

মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ তথা দুর্বল বলে মন্তব্য করেছেন।

দ্রষ্টব্য-

ইমাম বায়হাকী রহঃ, {সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী-৩/৪০৯}

ইমাম নববী রহঃ{খুলাসা-২/১০২২}

ইবনুল মুলাক্কিন রহঃ, {আলবাদরুল মুনীর-৫/৩১৩}

আল্লামা হায়সামী রহঃ- {মাযমাউজ যাওয়ায়েদ- বর্ণনা নং-৪৬}

ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ {আততালখীসুল হাবীর-২/৬৯১}

আল্লামা সানআনী রহঃ {সুবুলুস সালাম-২/১৭৫}

শাওকানী রহঃ {নাইলুল আওতার-৪/১২৭}

সকল মুহাদ্দিসীনে কেরাম উক্ত হাদীসকে জঈফ বলে মন্তব্য করলেও কেউ একে জাল বা বানোয়াট বলে মন্তব্য করেননি।

তাছাড়া ফাজায়েলের ক্ষেত্রে জঈফ হাদিস হলেই আমল করা যাবে।

أنه يعمل به في الفضائل والترهيب والترغيب فقط ولا يعمل به في الأحكام والحلال والحرام والعقائد

وهذا القول نسبه النووي إلى جمهور العلماء من المحققين والمحدثين بل نقل الإجماع في ذلك

সুতরা উক্ত হাদীসের উপর ভিত্তি করে রাসূল সাঃ থেকে সুনিশ্চিত প্রমাণিত সুন্নত না মনে করে এমনিতে আমল করাতে কোন সমস্যা নেই। এ আমলকে বিদআত বলা দ্বীনী বিষয়ে বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছু নয়।

এছাড়াও ফতুয়ায়ে হিন্দিয়ার ১ম খন্ডের ১৬৬ নাম্বার পৃষ্ঠায় উক্ত মামুলকে মুস্তাহাব বলে গন্য করা হয়েছে…

ويستحب ……ثلاث حثيات من التراب بيده…….ويقول في حثية الاولي منها خلقناكم و في الثانية و منها نخرجكم الخ

(ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৬, মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/৭৬)

উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি সঠিক এবং আমল করায় কোন সমস্যা নাই। والله تعالى أعلم

উত্তর প্রদান

মুফতী মাসুম বিল্লাহ

Facebook Comments Box