জুমআ মুবারক বলার হুকুম

By | August 27, 2021

প্রশ্ন:

জুম্মা মোবারক বলার ব্যাপক প্রচলন দেখা যায়। এভাবে বলা যাবে কি? কুরআন হাদীছের আলোকে বললে উপকৃত হবো।

উত্তর: وبالله سبحانه التوفيق

জুমআ আরবি শব্দ জুমুআএর অর্থ একত্র হওয়া। আল্লাহতায়ালা এই দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে দিনটাকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়।

এখানে জুমআ অর্থ: জুমআর দিন, আর মুবারক শব্দের অর্থ: বরকতময়, কল্যাণময়।জুমআ মুবারক অর্থ: বরকতময় জুমা দিবস।

জুমআর দিনটা বরকতময় হওয়ার দুআ হিসেবে জুমআ মুবারক বলায় কোন সমস্যা নাই।

এমন ধরণের কাজ, যা করা বা বলার জন্য আপনার সওয়াবও হবে না, আবার না করার কারণে কোনো গোনাহও হবে না।

তবে বরকতের দুআ হিসেবে জুমআ মুবারক বলা জায়িয হলেও ব্যাপারে শরীয়াতে বা কুরআন সুন্নাহে বিশেষ কোনো নির্দেশনা বা বিশেষ কোন বাক্য ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আসে নি।

জুমার দিন মুসলিমদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। কেননা এ মর্মে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: 
إِنَّ هَذَا يَوْمُ عِيدٍ جَعَلَهُ اللهُ لِلْمُسْلِمِينَ ، فَمَنْ جَاءَ إِلَى الْجُمُعَةِ فَلْيَغْتَسِلْ ، وَإِنْ كَانَ طِيبٌ فَلْيَمَسَّ مِنْهُ ، وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ
“নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা মুসলিমদের জন্য জুমু‘আর দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। সুতরাং জুমু‘আয় শরিক হওয়ার পূর্বে গোসল করে নিবে। আর সুগন্ধি থাকলে, ব্যবহার করবে। আর অবশ্যই মিসওয়াক করবে।” (সুনানে ইবনে মাজাহ: হা/ ১০৯৮, সনদ হাসান)

তাহলে মুসলিমদের জন্য মোট ঈদ তিন দিন। বাৎসরিক ঈদ হল,

ঈদুল আযহা (কুরবানির ঈদ) এবং ঈদুল ফিতর (রমাযানের ঈদ)।

আর সাপ্তাহিক ঈদ হল, জুমার দিন।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ঈদুল ফিতর ও আযহার শেষে সাহাবীগণ একে অপরের সাথে দেখা হলে এ বলে, শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন: “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম” “আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের পক্ষ থেকে (নেক আমল) কবুল করুন।”

তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিংবা সাহাবীগণ জুমআর দিনের কোন ধরণের শুভেচ্ছা বিনিময় করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। 

সুতরা জুমআ মুবারক বলে দিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করা উদ্দেশ্য হলে তা পরিত্যাজ্য।

এভাবে বলার ব্যাপক প্রচলন করা বা গুরুত্ব দিয়ে প্রচার-প্রসার করা, ম্যাসেজ আদান-প্রদান করা, কেউ না বললে তাকে নিন্দা জানানো বা খারাপ মনে করা ঠিক নয়।

বরং দ্বীনী অন্য কাজের প্রচলন এবং প্রচার-প্রসার করা জরুরী।

বিশেষত: জুমআর দিনের নামায, খুতবায় আগে আগে শরীক হওয়া, ও অন্যান্য সুন্নাতগুলো পালনে সচেষ্ট হওয়া কাম্য। বেশি বেশি দুরুদ পাঠ, যিকির, তিলাওয়াত করা চাই।

উল্লেখ্য, সঠিক উচ্চারণ জুমআ মুবারক, জুম্মা সঠিক নয়। والله تعالى أعلم

فی القرآن الکریم:

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰہِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۹﴾

(سورۃ الجمعۃ، آیت: 9)

وفی کنز العمال:

“أكثروا من الصلاة علي في يوم الجمعة فإنه يوم مشهود تشهده الملائكة، وإن أحدا لن يصلي علي إلا عرضت علي صلاته حتى يفرغ منها”. (هـ) عن أبي الدرداء.

(ج: 1، ص: 488، ط: مؤسسۃ الرسالۃ)

وفی سنن الدارمی:

عن أبي سعيد الخدري، قال: «من قرأ سورة الكهف ليلة الجمعة، أضاء له من النور فيما بينه وبين البيت العتيق»

(ج: 4، ص: 2143، ط: دار المغنی)

উত্তর প্রদান

মুফতী মাসূম বিল্লাহ

Facebook Comments Box