
২টি_আমল!
আসুন! করার চেষ্টা করি, আল্লহ তাআলা তাওফীক দিন, আমীন!
১টি_ওয়াজিব:
* আইয়ামে তাশরীকে তাকবীর বলা
নয় জিলহজের ফজর থেকে তের তারিখের আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত নামায হয়।
এই ২৩ ওয়াক্ত প্রত্যেক ফরয নামাযের পর একবার এই তাকবীর পড়বে—
اَللهُ أَكْبَرُ، اَللهُ أَكْبَرُ، لَاإِلَهَ إِلاَّ اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ، اللهُ أَكْبَرُ وَلِلّٰهِ الحَمْدُ
হযরত উমর রাযি ও আলী রা. থেকে বর্ণিত নিচের হাদিসটিতে তাকবীর পড়ার কথা বলা হয়েছে—
▪️عن عُمرَ بنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عنه: (أنَّه كان يُكبِّر دُبرَ صلاةِ الغداةِ من يومِ عَرفةَ إلى صلاةِ العصرِ مِن آخِرِ أيَّامِ التَّشريقِ)
- رواه ابن المنذر في ((الأوسط)) (2200)، والبيهقي (3/314) (6496).
▪️عن عليٍّ رَضِيَ اللهُ عنه: (أنَّه كان يُكبِّرُ من صلاةِ الفجرِ يومَ عَرفةَ، إلى صَلاةِ العَصرِ مِن آخِرِ أيَّامِ التَّشريقِ)
-رواه ابن أبي شيبة في ((المصنف)) (2/165). صحَّحه الألباني في ((إرواء الغليل)) (3/125).
হযরত উমর রাযি ও আলী রাযি. হতে বর্ণিত,
তিনি আরাফার দিন তথা নয় যিলহজ্জ ফজরের পর হতে আইয়ামে তাশরীকের শেষদিনের আছরের পর তাকবীর দিতেন।
– মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, ২/১৬৫।
এ ছাড়া ফাতাওয়ার কিতাবের ইবারতও দেখা যেতে পারে-
فَعِنْدَ أَبِي حَنِيفَةَ آخِرُهُ عَقِيبَ صَلَاةِ الْعَصْرِ مِنْ يَوْمِ النَّحْرِ وَعِنْدَهُمَا عَقِيبَ صَلَاةِ الْعَصْرِ مِنْ آخِرِ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ فَعِنْدَهُ يُكَبِّرُ عَقِيبَ ثَمَانِي صَلَوَاتٍ وَعِنْدَهُمَا عَقِيبَ ثَلَاثٍ وَعِشْرِينَ صَلَاةً … وَالْفَتْوَى عَلَى قَوْلِهِمَا كَذَا فِي الْمُصَفَّى
-আল-জাওহারাতুন নাইয়িরাহ : খ. ১, পৃ. ৩৭৭
আরো দেখুন—
– ফাতওয়া শামী-তৃতীয় খন্ড, ৬১ পৃষ্ঠা, সালাত অধ্যায়, ঈদ পরিচ্ছেদ,
– ইলাউস সুনান, সালাত অধ্যায়, তাকবীরাতুত তাশরীক পরিচ্ছেদ, ৮ম খন্ড, ১৪৮ পৃষ্ঠা।
* তাছাড়া অন্যান্য সময়েও বেশি পরিমাণে তাকবীর-তাহলীল-তাসবীহ পাঠ করা —
এই তাকবীর প্রকাশ্যে ও উচ্চস্বরে মসজিদ, বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, বাজারসহ সর্বত্র উচ্চ আওয়াজে পাঠ করা উচিত।
তবে মেয়েরা নিচু-স্বরে পাঠ করবে।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রাসুল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
وعن ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ: “مَا مِنْ أَيَّامٍ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ وَلَا أَحَبُّ إِلَيْهِ فِيهِنَّ الْعَمَلُ مِنْ هَذِهِ الْأَيَّامِ: عَشْرِ ذِي الْحِجَّةِ- أَوْ قَالَ: الْعَشْرُ- فَأَكْثِرُوا فِيهِنَّ مِنَ التَّهْلِيلِ وَالتَّسْبِيحِ وَالتَّكْبِيرِ وَالتَّحْمِيدِ”.
رَوَاهُ ابْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ وَأَبُو يَعْلَى، وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الشُّعَبِ بِسَنَدٍ صَحِيحٍ. إتحاف الخيرة المهرة للبوصيري 3/170.
এ দশ দিন নেক আমল করার চেয়ে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় ও মহান কোনো আমল নেই।
তাই তোমরা এ সময়ে —
তাহলীল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবীর (আল্লাহু আকবার) ও তাহমীদ (আল-হামদুলিল্লাহ) বেশি বেশি করে পড়।
-মুসনাদ আহমাদ : ১৩২
-বাইহাকী, শুআবুল ঈমান : ৩৪৭৪
وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ، وَأَبُو هُرَيْرَةَ: «يَخْرُجَانِ إِلَى السُّوقِ فِي أَيَّامِ العَشْرِ يُكَبِّرَانِ، وَيُكَبِّرُ النَّاسُ بِتَكْبِيرِهِمَا» رواه البخاري.
হযরত ইবনে উমর রাযি. ও হযরত আবূ হুরায়রাহ রাযি এ দশ দিনে বাজারে বের হতেন তখন তাকবীর বলতেন, তাদের তাকবীরের সাথে মানুষরাও তাকবীর বলত। সহীহ বুখারী।
২য়টি_মুস্তাহাব:
৯ যিলহজ্জের ফযীলতপূর্ণ রোযা।
▪️ عن أبى قتادة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وآله وسلم قال: «صيام يوم عرفة أحتسب على الله أن يكفر السنة التى قبله والسنة التى بعده»
- رواه مسلم
সহীহ হাদীসে হযরত আবু কাতাদা রা. হতে বর্ণিত:
عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ:
صِيَامُ يَوْمِ عَرَفَةَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ، وَالسَّنَةَ الَّتِي بَعْدَهُ.
رواه مسلم.
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরাফার দিন অর্থাৎ নবম তারিখের রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর নিকট আশাবাদী যে, তিনি এর দ্বারা বিগত এক বছর ও আগামী এক বছরের গুনাহ মিটিয়ে দেবেন।
– সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৬২; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৭৪৯
* ইয়াওমে আরাফা’ অর্থ নয় জিলহজ্ব।
এটিই সঠিক ব্যাখ্যা।
কারণ, এই রোযা আরাফা বা উকুফে আরাফার আমল নয়; তা ঐ তারিখের আমল।‘ইয়াওমে আরাফা’হচ্ছে ঐ তারিখের (নয় যিলহজ্বের) পারিভাষিক নাম।
উদ্দেশ্য, নয় তারিখে বা ঈদের আগের দিন আমলটি করতে হবে।
তবে মনে রাখা উচিত,
অনেক ওলামায়ে কেরামের মতে হাজীদের জন্য এই দিনে আরাফার ময়দানে ওকূফ ও মুজাহাদার শক্তি অর্জনের নিমিত্তে রোযা না রাখা উত্তম।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীন হজ্বের মধ্যে এই দিনের রোযা রাখতেন না।
– সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১২৩, ১১২৪; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৭৫০-৭৫১; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৪১৯; মাআরিফুস সুনান ৫/৪৩০-৪৩১
– ৯ যিলহজ্জই। ইয়াওমু আরাফা পরিভাষা মাত্র।
– সৌদির সাতে মিল করা অসম্ভব!
শুরু -শেষ ৩ ঘন্টা পার্থক্য!
– ইয়াওমুন নাহর ও আরাফা দিবসের মাঝে কোন দিন নাই।
– পরবর্তী ব্যাখ্যাকারগণ জিলহজ্বের নবম দিন তথা ৯ তারিখকেই ইয়াওমে আরাফা বলেছেন।
ইমাম নওয়াবী (৬৭৬ হি.) রহ. তাঁর মুসলিম শরীফের বিখ্যাত শরাহ আল মিনহাজে জিলহজের নয় দিনের রোজা সম্পর্কে বলেন—
هي مستحبة استحبابا شديدا، لا سيما التاسع منها وهو يوم عرفة. (شرح رقم الحديث: 1171—جزء 7 صفحة 71 الشاملة)
এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুস্তাহাব। বিশেষকরে নবম দিন। যা ইয়াওমে আরাফা।
পরবর্তী ব্যাখ্যাকারদের মধ্যে আল্লামা আজীমাবাদী (১৩২৯ হি.) তাঁর “আউনুল মা’বুদে”,
আল্লামা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী?(১৩৫৩ হি.) তাঁর “তুহফাতুল আহওয়াজিতে” ইমাম নওয়াবীর মত উল্লেখ করেছেন।
মিশকাতের শরাহ মিরআতুল মাফাতিহেও ৯ তারিখকে ইয়াওমে আরাফা বলা হয়েছে।
আল্লাহপাক আমাদেরকে বরকতের এসময়গুলোতে বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
– মুফতী মাসূম বিল্লাহ।
Sharia Specialist, Islamic Economist, Banking & Finance Expert.
Khatib & Mufassir at Al Madina Jame Masjid at Eastern Housing, Pallabi Phase-2, Mirpur 11 ½.
Senior Muhaddis & Mufti at Jamia Islamia Darul Uloom Dhaka,Masjidul Akbar Complex, Mirpur-1,Dhaka-1216
Ustazul fiqh & Ifta at مركز البحوث الاسلامية داكا. Markajul Buhus Al Islamia Dhaka