ক্রিসমাস উপলক্ষে শপিং, আলোকসজ্জা, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার শরয়ী বিধান

By | December 24, 2024

প্রশ্ন: ক্রিসমাস উপলক্ষে শপিং করা, আলোকসজ্জা করা, আতশবাজি বিক্রয় ও ফুটানো এবং Christmas অনুষ্ঠানে
অংশগ্রহণ জায়েয হবে কি?

উত্তর: وبالله سبحانه التوفيق

কোন মুসলিমের জন্য ক্রিসমাস (Christmas) উপলক্ষে
শপিং করা, আলোকসজ্জা করা, আতশবাজি বিক্রয় ও ফুটানো
এবং ক্রিসমাস (Christmas) অনুষ্ঠানে
অংশগ্রহণ সম্পূর্ণ হারাম।
আরো ভয়ংকর হলো, তাদের অন্তর্ভূক্ত হিসেবে গণ্য হবে। নাউযুবিল্লাহ!

ক্রিসমাস উপলক্ষে উক্ত কাজগুলো করা স্পষ্টতই কাফিরদের রীতিনীতির সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন।

অথচ ইসলামে ইবাদত ও উৎসব ইত্যাদির ক্ষেত্রে কাফিরদের সাথে, বিশেষত ইহুদি-খ্রিষ্টানদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করা থেকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

এমন ব্যক্তিকে মুসলিমদের কাতার থেকে বের করে অমুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

হুজাইফা রাজিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
‘যে ব্যক্তি অন্য জাতির সঙ্গে সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।’
[সুনানু আবি দাউদ : ৪০৩১]

আমর বিন শুআইব রাহিমাহুল্লাহ থেকে তাঁর বাবার সূত্রে দাদা থেকে বর্ণিত,
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى
‘ওই ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে (মুসলিমদের বাদ দিয়ে) বিজাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে। তোমরা ইহুদি-খ্রিষ্টানদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করো না।’
[সুনানে তিরমিজি : ২৬৯৫]

এ হাদিস দুটি থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয় যে, বিজাতীয় সংস্কৃতি পালন করা, বিধর্মীদের উৎসবে শরিক হওয়া এবং তা সমর্থন করা সুস্পষ্ট হারাম ও নাজায়িজ।

অতএব, ক্রিসমাসসহ এ ধরনের বিজাতীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করবে, তারাও এক্ষেত্রে তাদের শ্রেণিভুক্ত বলে বিবেচিত হবে। নাউযুবিল্লাহ!

অপরদিকে,
এসব কাজে প্রচুর অর্থ-সম্পদের অপচয় হয়। রঙের খেলা, আতশবাজি, পটকাবাজি, গান-বাজনা, ডিজে নাচ, বিভিন্ন পদের খাবার, হোটেল বুকিং, আনন্দ শোভাযাত্রা, দলবদ্ধভাবে বাইক চালনা ইত্যাদির মতো অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় খাতে প্রচুর অর্থ-সম্পদ ব্যয় করা হয়।
অথচ অর্থের অপচয় ও অনর্থক কাজ থেকে বেঁচে থাকা একজন মুসলিমের একান্ত কর্তব্য।
একজন প্রকৃত মুসলিম কখনও এসব অর্থহীন আনন্দ-অনুষ্ঠান ও শয়তানি কাজকর্মে লিপ্ত হতে পারে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন :
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ
‘আর তোমরা খাও এবং পান করো, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’
[সুরা আল-আরাফ : ৩১]

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন :
إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ
‘নিশ্চয় অপচয়কারীরা হলো শয়তানের ভাই।’
[সুরা বনি ইসরাইল : ২৭]

আবু হুরাইরা রাজিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :
مِنْ حُسْنِ إِسْلاَمِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لاَ يَعْنِيهِ
‘ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো, অনর্থক বিষয় পরিত্যাগ করা।’
[সুনানে তিরমিজি : ২৩১৭]

আল্লহ তাআলা আমাদের সকলকে হেফাজত করুন আমীন।

উত্তর দিয়েছেন –
Mufti Masum Billah

Facebook Comments Box