প্রশ্ন:আসসালামুয়ালাইকুম,মুহতারাম মুফতী সাহেব, শরীয়তের দৃষ্টিতে একজন মুসলিমের পক্ষ থেকে কোন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে “আদাব” বা “নমস্কার” জানানোর হুকুম কি। একান্ত প্রয়োজন হলে তাকে সালামের স্থলে السلام على من أتبع العديد বলা যায় এতটুকু জানি। তারপরও কেউ যদি উপরোক্ত শব্দ ব্যবহার করে তাহলে কি গোনাহগার হবে। From: Zishan Ahmad উত্তর: وبالله سبحانه التوفيق মানব সমাজে পারস্পরিক সাক্ষাতের সময় অভিবাদনের বিভিন্ন রীতিনীতি প্রচলিত। অভিবাদন জানানোর ক্ষেত্রে সম্প্রদায়-জাতি ও বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা নিজ ধর্মবিশ্বাস, আদর্শ ও অভিরুচি অনুযায়ী একে অপরের সাক্ষাতের সময় বিভিন্ন শব্দ-ভাষা ও রীতি ব্যবহার করে সম্ভাষণ করে থাকেন। এমনই ধারায় বিধর্মীদের অভিবাদনের শব্দ হল, নমস্কার। ‘নমস্কার’ শব্দটি এসেছে মূল সংস্কৃত শব্দ ‘নমঃ’থেকে যার আভিধানিক অর্থ সম্মানজ্ঞাপনপূর্বক অবনত হওয়া।দেখা যাক, এ সম্পর্কে শাস্ত্র কি বলে ! “যো দেবো অগ্নৌ যো অপসু যো বিশ্বং ভূবনাবিবেশ য ওষধীষু যো বনস্পতি তস্মৈ দেবায় নমো নমঃ॥”(শ্বেতাশ্ব তর উপনিষদ ২-১৭)“যোগ যেমন পরমাত্মার দর্শনের সাধন বা উপায়, নমস্কারাদিও অনুরূপ বলিয়া তাঁহাকে নমস্কার জানাই।” তিনি কি রুপে? তিনি দেব অর্থাৎ পরমাত্মার প্রকাশভাব। তিনি কোথায়? তিনি আছেন অগ্নিতে, জলে, তৃণ-লতাদিতে, অশ্বাথাদি বৃক্ষে, তিনি এই বিশ্বভুবনে অন্তর্যামীরুপে অণুপ্রবিষ্ট হইয়া আছেন।” তাই যখন কাউকে নমস্কার জানানো হয় তখন মূলত সর্বজীবে অন্তর্যামীরুপে অবস্থিত পরমাত্মাকেই প্রণতি নিবেদন করা হয়, কোন মনুষ্যদেহকে নয়। কেউ কেউ এ শব্দের অর্থ বলেছেন- ‘আপনার অন্তঃস্থ ঈশ্বরকে আমি অন্তর দিয়ে অনুভব করছি ও সম্মান প্রদর্শন স্বরূপ তাঁর কাছে মাথা নত করে প্রণাম জ্ঞাপন করছি।’ (নাউজুবিল্লাহ) এছাড়াও নমস্তে এবং নমস্কারম্ ব্যবহৃত হয়। নমস্কার কথাটি উচ্চারণ করা হয় হাতের তালুদুটোকে পরস্পর সংলগ্ন করে কিছুটা নত হয়ে, এই সময় আঙুলগুলো উপরের দিকে নির্দেশিত থাকে আর বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ বুকের কাছে থাকে। এই ভঙ্গিটিকে অঞ্জলি মুদ্রা বা প্রণামাসন বলা হয়। আবার কোনো শব্দ উচ্চারণ না করেও এই ভঙ্গিমাটি সম্পন্ন করা যায়, এতে অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না। প্রণামের ছয়টি রূপের একটি হল নমস্কার। নমস্কারএবং প্রণামকে অভিন্ন হিসেবেই মনে করা হয়। প্রণাম হল একটি “সম্মান সূচক অভিবাদন” বা “শ্রদ্ধাপূর্বক ভক্তি” কোন কিছুর সামনে বা কোন ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে। সাধারণত এটা করা হয় দাদা, বাবা-মা, পিতামহ, গুরুজন, শিক্ষক বা বয়সে বড় বা সম্মানের উপযোগী এমন যে কাউকে। আবার, দেব দেবীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাবোধ থেকেও এটি করা হয়। এটি ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ মন্দিরে বা পূজার ষোড়শ উপচারের মধ্যে নমস্কার অন্যতম উপচার। অর্থাৎ শাস্ত্র অনুসারে, নমস্কার যেমন দেবদেবীর পুজোর একটি আচার, তেমনিই অতিথি বা অন্য ব্যক্তিকে সম্ভাষণেরও এক অঙ্গ। তৈত্তিরীয় উপনিষদ্ নামক প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থে নমস্কারকে “অতিথিদেবো ভব” নামে অভিহিত করা হয়েছে (অর্থাৎ, অতিথি দেবতাতুল্য)। কিছু গ্রন্থে বলা আছে, কারোর কোনো দান বা উপহার গ্রহণে বিনয় জানাতে, অথবা কোনো ব্যক্তির কৃপার প্রতি ধন্যবাদ জানাতেও নমস্কার ব্যবহার করা যেতে পারে। (উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট হতে সংগৃহিত) সুতরাং দেব-দেবীর… Read More »